এখানেই বিনোদন

লন্ডনের হাসপাতালেই সময় কাটছে কুমার বিশ্বজিতের


সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড়। তারপর থেকেই হাসপাতালে আছেন তিনি।

এ বছরের (১৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে এখনও রয়েছেন লন্ডনের সেন্ট মাইকেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে। একমাত্র ছেলের এই দুরবস্থায় আট মাস ধরে স্ত্রীসহ বিশ্বজিতের ঠিকানা এখন ওই হাসপাতাল।

এদিকে ২২ নভেম্বর ছিল নিবিড়ের ২২তম জন্মদিন। এদিন নতুন একটি গানের কয়েকটি লাইন অবমুক্ত হয়েছে বিশ্বজিতের। গানটির নাম ‘নিবিড় অপেক্ষা করছে’। এর কথা লিখেছেন হাসানুজ্জামান মাসুম। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন কিশোর দাস।

গানটি প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বিশ্বজিৎ বলেন, শিল্পীর প্রাণ মরে যায় যখন, তখন গান গাওয়াটাই তার জন্য কঠিন হয়ে যায়। আর আট মাস ধরে একরকম বেঁচে থেকেও বেঁচে না থাকার মতো আছি আমি। এবার ব্যক্তিগত কিছু কাজে যখন দেশে যাই, তখন আমার স্নেহের দুই ছোট ভাই কিশোর ও বাপ্পী এসে ধরল গানটি গাওয়ার জন্য।

বলল, আপনার জন্যই গানটি করা। গানটির কথা ও সুর ভালো লাগল। তার চেয়ে বড় বিষয় হলো, গানটিতে একটা আর্ত এবং অপেক্ষার বিষয় রয়েছে, যেটা আমাকে খুব স্পর্শ করেছে, তাই গাইলাম।

গানটি বাবার প্রতি সন্তানের আশীর্বাদ উল্লেখ করে এ গায়ক বলেন, ২২ নভেম্বর নিবিড়ের জন্মদিন। কাকতালীয়ভাবে ২২ নভেম্বর ওর ২২তম জন্মদিনও। গানটির শিরোনামও ‘নিবিড় অপেক্ষা করছে’। তাই এই বিশেষ দিনে নিবিড়ের প্রতি এটা আমার আশীর্বাদ।

স্মৃতিচারণ করে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, জন্মদিনটা নিবিড় তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নিয়েই বিশেষভাবে আনন্দ উদ্‌যাপন করত। কিন্তু সবকিছু কেমন এলোমেলো হয়ে গেল। দুর্ঘটনায় ওর যে তিনি বন্ধুকে আমরা হারিয়েছি, তারা প্রত্যেকেই ছিল আমার সন্তানের মতো। ওদের সঙ্গে আমরা বাবা-মা দুজনই থেকেছি, ঘুমিয়েছি। সন্তান হারানোর বেদনা, যে কষ্ট ওদের বাবা-মা প্রতিনিয়ত পাচ্ছেন, আমরাও তা তিলে তিলে অনুভব করছি।

এ গায়কের ঠিকানা এখন হাসপাতাল। এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মনে পড়ছে, ২০২১ সালে আমার জন্মদিনে আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য কাউকে কিছু না জানিয়ে কানাডা থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছিল নিবিড়। ওর জন্মদিন গেল। আমার আর ওর মায়ের প্রতিটি দিন এখন কাটে হাসপাতালে। এটাই এখন আমাদের বাড়িঘর। একটু সময়ের জন্যও নিবিড়কে রেখে কোথাও যেতে ইচ্ছা করে না। আমাদের প্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষণ কাটে একটা অপেক্ষা, একটা প্রত্যাশা ঘিরে—নিবিড় কথা বলবে, ফিরে আসবে।

প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনার পর অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ (ওপিপি) জানিয়েছিল, টরেন্টোর হাইওয়ে ৪২৭–এর দুনদাস স্ট্রিট ওয়েস্টে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ সময় গাড়িটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল। সড়ক বিভাজকে ধাক্কা খেয়ে গাড়িটি উল্টে আগুন ধরে যায়।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাড়ি থেকে চারজনকে উদ্ধার করেন। গাড়ির পেছনের সিটে বসা দুজনকে ঘটনাস্থলেই মৃত ঘোষণা করা হয়। সামনের সিটে বসা শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হলে সেখানে তিনি মারা যান।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

85,000FansLike
285,000SubscribersSubscribe

Latest Articles