চলচ্চিত্র অভিনেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে দলের নাম রেখেছেন ‘বাংলাদেশ ইনসাফ পার্টি’ (বিআইপি)। দলটির লোগোতে রাখা হয়েছে শান্তির প্রতীক পায়রা!
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে বর্ষীয়ান এই অভিনেতার সভাপতিত্বে দল গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন দলের ৫১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হবে এ মাসের শেষে অথবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
সোহেল রানার ঘনিষ্টজন জানিয়েছেন, দলের প্রতীক হিসেবে অনেকে ‘কবুতর’ লিখছেন। এটা ঠিক নয়, কবুতর দলের লোগো। দলের প্রতীক হবে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বরাদ্দ দেয়া প্রতীক। এসময় তিনি জানান, কোন কারণবশত দলের নামও পরিবর্তন হতে পারে।
ঢালিউডের ‘সোনালি যুগ’ এর অভিনেতা সোহেল রানা দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রজীবনে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে পড়ার সময় তিনি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৫ সালে তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সহকারী সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৮ সালে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সোহেল রানা ইকবাল হলের ভিপি নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের সদস্যপদ গ্রহণ করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নির্বাচনী উপদেষ্টা নিযুক্ত হন।
প্রবীণ ও প্রশংসিত রুপালি পর্দার অভিনেতা সোহেল রানা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরপরই প্রযোজক হিসেবে পারভেজ ফিল্মস প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে দেশের চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন।
এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “ওরা ১১ জন” নির্মাণ করেন।
১৯৭৩ সালে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক কাজী আনোয়ার হুসাইনের বিখ্যাত স্পাই থ্রিলার সিরিজ “মাসুদ রানা”র গল্প অবলম্বনে “মাসুদ রানা” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অভিনেতা ও পরিচালক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয়।
অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য সোহেল রানা তার ক্যারিয়ারে আজীবন সম্মাননাসহ তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।