দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা তৌকীর আহমেদ। ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা, দুই জায়গাতেই অভিনয়ের দক্ষতায় সমানভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। তবে তার অভিনয় জীবনের শুরুটা মঞ্চ থেকেই। কয়েক দিন আগেই দেশজুড়ে মুক্তি পেয়েছে সিনেমা ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’। সিনেমায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) স্টার সিনেপ্লেক্সে চলচ্চিত্রটি দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৌকীর আহমেদ। সিনেমা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এই অভিনেতা।
সিনেমায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর চরিত্রে কাজ করার প্রসঙ্গে তৌকীর বলেন, আমি এ সিনেমায় শুধু কাজ করতে চেয়েছিলাম। যখন শুনলাম তাজউদ্দীনের পরিবর্তে আমাকে সোহরাওয়ার্দী চরিত্রে অভিনয় করতে হবে, তখন আমি এটিকে প্রমোশনই মনে করেছি।
কারণ, সিনেমায় তাজউদ্দীন সাহেবের চরিত্রের ব্যাপ্তির চেয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর চরিত্রটির ব্যাপ্তি ও গুরুত্ব বেশি। আমি আমার জায়গা থেকে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এখন সিনেমা দেখার পর দর্শকরা আমার অভিনয়ের জন্য অনেক ইতিবাচক মন্তব্য করছেন। সেটা ভীষণ ভালো লাগছে।
অভিনেতা আরও বলেন, আসলে ঐতিহাসিক চরিত্র ফুটিয়ে তোলা অনেক কঠিন। কারণ, সেটি মানুষের পারসেপশনে আছে, ইতিহাসের পাতায়ও আছে। সুতরাং সেটিকে যেনতেনভাবে উপস্থাপন করা যায় না। তাই পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে এবং ভেবেচিন্তে কাজটি করতে হয়েছে আমাকে।
চরিত্রটির জন্য প্রস্তুতি কেমন ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে তৌকীর বলেন, অভিনেতা হিসেবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর চরিত্র ধারণ করা যে কারও জন্যই ভীষণ আনন্দের। আমাদের দেশ ও রাজনীতির ইতিহাসে তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক চরিত্র। আমাদের দেশের ইতিহাসে তার ভূমিকা অনেক। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে তার প্রভাব অত্যন্ত তাৎপর্যময়। সুতরাং একটি বড় পরিসরে প্রস্তুতি তো নিতেই হচ্ছে।
অভিনেতা বলেন, পর্দায় চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে বিভিন্ন বইপত্র ঘাঁটতে হয়েছে আমাকে। শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জীবনীর ওপর লেখা বিভিন্ন বই আমাকে দারুণ সাহায্য করেছে। অনেকের অভিজ্ঞতা থেকেও তথ্য পেয়েছি, যারা তাকে দেখেছেন। তার ইন্টারভিউর ফুটেজ দেখেছি। সেগুলো অনেক কাজে লেগেছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটি ব্রিফ দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন যে, উনি কিন্তু ভালো বাংলা বলতে পারেন না। তাই ইংরেজি, উর্দু এসব মিলিয়েই চরিত্রটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছি।
মঞ্চের অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে কি না, জানতে চাইলে তৌকীর বলেন, অভিনয় তো অভিনয়ই। সেটা যে মাধ্যমেই হোক না কেন। এরপরও মঞ্চের অভিজ্ঞতা আমার সবসময় কাজে লাগে। কারণ, আমার বিদ্যাপীঠ তো মঞ্চ। যা শিখেছি, মঞ্চ থেকেই শিখেছি। এরপর সেগুলোর অনুশীলন করেছি। এখনও করছি। ভালো লেগেছে। দর্শকরাও ভালো বলছেন।