কণ্ঠশিল্পী কানিজ খন্দকার মিতু এখন মাতাবেন ‘কোক স্টুডিও বাংলা লাইভ’ কনসাটের মঞ্চ। একই প্ল্যাটফর্মে তিনি গেয়েছিলেন লালন সাঁইজির বিখ্যাত গান, ‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে’। ইতোমধ্যে গানটি শ্রোতামহলে ছড়িয়ে সাড়া ফেলেছে। তবে হঠাৎ করে নজর কাড়লেও মিতুর এই পর্যন্ত আসার যাত্রাটা অনেকদিনের।
সম্প্রতি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগ থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন মিতু। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল করছেন। মিতুর স্বপ্নপূরণের প্রথম ধাপটি শুরু হয় ২০১১ আয়োজিত সংগীতবিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘মেঘে ঢাকা তারা’য় অংশ নিয়ে। এই আয়োজনে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন তিনি।
কোক স্টুডিওতে গুনী সংগীতশিল্পী ও মিউজিশিয়ানদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে মিতু বলেন, ‘এত বড় প্ল্যাটফর্মে লালন সাঁইজির গান করতে পেরেছি, এটি আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানাই অর্ণবদার প্রতি। বিশেষ কৃতজ্ঞতা আমার ওস্তাদ গোলাম রাব্বানীর প্রতি। তিনি আমার পাশে ছায়ার মতো না থাকলে এতদূর আসা হতো না। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষকের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। তাছাড়া আমাদের ভিসি স্যার সৌমিত্র শেখর, সংগীত বিভাগের ডিন ড. মোশাররফ শবনম, বিভাগীয় প্রধান ড. জাহিদুল কবির এবং ড. আরিফুর রহমান স্যাররা সবসময় আমাকে বিভিন্নভাবে পড়াশোনা আর গান নিয়ে পরামর্শ ও সহযোগীতা করে থাকেন। স্যারদের সহযোগীতা ছিল বলেই আমি পড়াশুনার পাশাপাশি গান নিয়ে আজকের এই জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি।
এছাড়া স্যারদের সহযোগীতায় আমি বাংলাদেশের বিলুপ্তপ্রায় অনেক গান নিয়েও গবেষণার কাজ করছি। এছাড়া ‘ঘাটো’ গানের উপর আমার নিজের করা একটি গবেষণা ‘মানববিদ্যা’ নামক একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।’ আর এর ‘ধূয়া’ গান নিয়ে আরেকটি গবেষণা করছি। আশা করছি, সব কিছু ভালোমতে শেষ হলে খুব শিগগিরই কোনো জার্নালে এটি প্রকাশ পাবে। এছাড়া টাঙ্গাইলের মেয়ে মিতুর গানের তালিম শুরু হয় ওস্তাদ গোলাম রাব্বানী রতনের কাছে। তিনি মিতুকে নিজের মেয়ের মতো করেই গানের তালিম দেন, মিতু তাকে গুরু বাবা বলেই ডাকেন মিতু নিজের ধ্যান-জ্ঞান একাকার করে সঙ্গী করেছিলেন গানকে।
গান নিয়ে নিজের ভবিৎষত পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছোট থেকেই গান নিয়ে থাকলেও কোক স্টুডিওর এই গানের মাধ্যমে আমার পুনর্জন্ম হলো। এই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। পাশাপাশি গান দিয়ে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন আপনাদের ভালো কিছু গান উপহার দিতে পারি। বর্তমানে ‘বাংলা বাউল স্টুডিও’ সিজন-১ নামের একটি অনুষ্ঠানের জন্য গান করেছি। আসছে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠানটি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচার হবে।’
‘কোক স্টুডিও বাংলা লাইভ’ কনসার্টের দ্বিতীয় সংস্করণের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কোক স্টুডিও বাংলা। ‘নাসেক নাসেক’র ছন্দ থেকে শুরু করে ‘কথা কইয়ো না’র জাদুকরী সুর-কোক স্টুডিও বাংলা’র শিল্পীদের অসাধারণ পারফরম্যান্সের সঙ্গে শ্রোতারা পাবেন একটি চমৎকার কনসার্টের অভিজ্ঞতা। আগামী ১০ নভেম্বর ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে হবে কোক স্টুডিও বাংলা লাইভ কনসার্ট।