প্রায়ই বিতর্কিত বিষয় নিয়ে খবরের শিরোনামে থাকেন কণ্ঠশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল। কখনও মাদক কাণ্ডে, কখনও বা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে। এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্তমান প্রেমিকার সঙ্গে নিজের ছবি প্রকাশ করেছেন নোবেল। সেখানেও শুরু হয়েছে বিতর্ক।
রোববার (১৯ নভেম্বর) নিজের ফেসবুকে প্রেমিকার সঙ্গে দুইটি ছবি প্রকাশ করেন নোবেল। ওই ছবিতে দেখা যায়, তার বুকে মাথা রেখে আছেন এক তরুণী। জানা যায় তার নাম ফারজান আরশি।
ক্যাপশনে গায়ক নোবেল লিখেছেন, ক্যাপশন কি লেখা লাগবে? আরশি। সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন লাভ ইমোজি। এরপর ফেসবুকে নোবেল তার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন ফারজান আরশির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।
এ দিকে ছবি প্রকাশের পর থেকেই মন্তব্যের ঘরে নোবেলের সঙ্গে আরশির পরিচয় জানতে চেয়েছেন নেটিজেনরা। এমনকি নিজের ফেসবুকে ওই তরুণীর সঙ্গে ছবি প্রকাশের পাশাপাশি এক ভক্তের মন্তব্যর জবাবে আরিশাকে তাদের ‘ভাবি’ বলেও সম্বোধন করেন নোবেল। এরপর থেকেই গুঞ্জন উঠেছে অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছেন।
এ বিষয়ে এতদিন ফারজান আরশি বক্তব্য না দিলেও বুধবার (২২ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে স্ট্যাটাসটি দিলেও পরবর্তীতে মুছে দিয়েছেন।
তবে আরশি যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তা আবার মুছে ফেলায় শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। কারণ সেই স্ট্যাটাসটি মুছে দিলেও তা ভাইরাল হয়ে যায়।
আরশি ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে নোবেলের বিরুদ্ধে তাকে জোর করে মাদক সেবন করানোর অভিযোগ এনে বলেন, নোবেল জোর করে নেশা করিয়ে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলা তোলে। নোবেলের সঙ্গে তার কোনোপ্রকার বিয়ে হয়নি এবং কোনো সম্পর্কও নেই। এ বিষয়ে ডেমরা থানায় জিডিও করেছেন তিনি। আমি এখন এমন একটা পরিস্থিতিতে আছি যে আমার সবকিছু স্বাভাবিক নেই। আমি মানসিকভাবে অনেক ভেঙে পড়েছি তারপরও আপনাদের সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করছি সবকিছু ক্লিয়ার করার জন্য।
স্ট্যাটাসে তিনি আরও জানান, আমি খুলনায় বিভিন্ন ব্লগ করে থাকি, সেজন্য একটি ভিডিও কন্টেন্ট বানানোর উদ্দেশ্যে নোবেলের বাড়ি গোপালগঞ্জ যাই। আমার সঙ্গে আমার এক বান্ধবী ও ছিল। ওখানে যাওয়ার পর পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যায়। নোবেল তার মায়ের সামনেই আমার গলায় ছুরি ধরে এবং আমার ফোনটি কেড়ে নেয় এবং জোর করে আমাকে ঢাকায় তার বাসায় নিয়ে যায়। আমাকে বিভিন্ন ড্রাগ জোড় ধরে সেবন করায় এবং মারধর করে। আমি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
অন্যদিকে, বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতে ফেসবুক লাইভে এসে ঘটনার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেন নাদিম নামের একজন। তিনি ফারজান আরশির স্বামী। এ সময় তাকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়।
ভিডিও বার্তায় নাদিম বলেন, আমি আমার স্ত্রীর প্রতারণার শিকার হয়েছি। তবুও চেষ্টা করছি তাকে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনার। এত বছর সে আমার সঙ্গে, আমি কখনো কল্পনাও করিনি আমার স্ত্রী এমন কিছু করবে। আমি কিছুই জানতাম না। আমার স্ত্রী আমাকে নিয়ে পোস্ট দিচ্ছে, স্টোরি দিচ্ছে, সবকিছুই ভালোই যাচ্ছিল। সুতরাং এমন কিছু ঘটছে সেই সন্দেহ করারও সুযোগ ছিল না। হঠাৎ করেই একদিন দেখলাম গায়ক নোবেল একটা প্রোফাইল পিকচার দিয়েছে। যেখানে তার সঙ্গে আমার স্ত্রী। আমি কোনোভাবেই এটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। মেনে নিতে পারছিলাম না।
অন্যদিকে জিডির বিষয়ে ঢাকা মহানগর ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার মধুসূদন দাশ গণমাধ্যমে বলেন, বেশ ক’দিন আগে ফারজান আরশি থানায় এসে মৌখিভাবে জানান তার মেয়েকে গায়ক নোবেল জোর করে তুলে এনেছেন। তবে তিনি লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। পরে ফারজান আরশি এসে জানান, তার বয়স ২২ বছর তাকে নোবেল জোর করে তুলে আনেনি। তিনি স্বেচ্ছায় নোবেলের সঙ্গে এসেছে। কিন্তু উভয় পক্ষের কেউ আমাদের কাছে লিখিত কিছু জানাননি।
প্রসঙ্গত, পরে ফারজান আরশির আজকের স্ট্যাটাসে নোবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগের সূত্র ধরে কোনো ব্যবস্থা পুলিশ নেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে অবশ্যই আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।