Sunday, December 22, 2024
Homeবিনোদনবিদায়ী বছরে হারিয়েছি যাদের

বিদায়ী বছরে হারিয়েছি যাদের


বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে ২০২৩। দরজায় কড়া নাড়ছে নতুন বছর ২০২৪। শোবিজ জগতের জন্য বছরটি ছিল বেশ ঘটনাবহুল। জীবনের ভ্রমণ শেষ করে এ বছরও বিনোদন অঙ্গনের বিভিন্ন ক্ষেত্রের কয়েকজন গুণী চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। কেউ রোগে ভুগে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন, আবার কারও মৃত্যু অন্য সবার কাছে ছিল আকস্মিক খবর। সবার মৃত্যু স্বজনদের যেমন শোকাতুর করেছে, ভাবিয়েছে ও কাঁদিয়েছে, তেমনি সহকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও ভক্তদের বিষাদের সাগরে ডুবিয়েছে। তবে তারা বেঁচে থাকবেন কাজে, স্মৃতিতে। এ বছর বিভিন্ন অঙ্গনে যাদের হারিয়েছি, একনজরে তাদের দেখে নেওয়া যাক।

চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক মারা যান ১৫ মে। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৫ বয়সে ‘সুজন মাঝি’ খ্যাত এই অভিনেতা মারা যান।

দীর্ঘ আট বছর ধরে এই সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এই অভিনয়শিল্পী ও রাজনীতিবিদ। সর্বশেষ ২০২১ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান তিনি। পরীক্ষায় রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরে নিজের পরিচিত চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। হাসপাতালে ভর্তির কদিন পর তার মস্তিষ্কেও সংক্রমণ ধরা পড়ে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যর্থ হয়।

এম খালেকুজ্জামান

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা এম খালেকুজ্জামান ২১ মার্চ নিজ বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। খালেকুজ্জামান স্কুল-কলেজ জীবনে অসংখ্য মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। বিটিভিতে প্রথম নওয়াজেশ আলী খানের প্রযোজনায় ‘সর্পভ্রমে রজ্জু’ নাটকে অভিনয় করেন তিনি।

পিয়ারী বেগম

৩০ মে বাংলাদেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এর অন্যতম নারী চরিত্রে অভিনয় করা পিয়ারী বেগম নিজ বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৬।

সোহানুর রহমান সোহান

স্ত্রীর মৃত্যুর এক দিন পরই ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি উত্তরার নিজ বাসায় ঘুমের মধ্যে মারা যান সোহানুর রহমান সোহান। বহু সফল চলচ্চিত্রের নির্মাতা তিনি। তার হাত ধরেই চলচ্চিত্রে আসেন সালমান শাহ, মৌসুমী, পপি, ইরিন ও শাকিব খান।

শফি বিক্রমপুরী

চলচ্চিত্রকার ও রাজনীতিবিদ শফি বিক্রমপুরী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি।

জিনাত বরকতুল্লাহ

একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী জিনাত বরকতউল্লাহ ২০ সেপ্টেম্বর নিজ বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারায় নৃত্যচর্চার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন জিনাত বরকতউল্লাহ।

সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী

‘ঘুড্ডি’খ্যাত নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী ১৮ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

হুমায়রা হিমু

২ নভেম্বর মারা যান অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু। জানা যায়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে তার মৃত্যু নিয়ে এখনও রহস্য রয়ে গেছে।

পান্না কায়সার

অভিনেত্রী শমী কায়সারের মা শহীদজায়া অধ্যাপক পান্না কায়সার ৪ আগস্ট রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা’র স্লোগানে পরিচালিত শিশু-কিশোরদের সংগঠন খেলাঘর নিয়ে আজীবন সক্রিয় ছিলেন।

নাদিরা বেগম

ভাওয়াইয়া শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা নাদিরা বেগম ৬ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

তারেক মাহমুদ

রাজধানীর কমিউনিটি হাসপাতালে মারা যান নাট্যনির্মাতা ও অভিনেতা তারেক মাহমুদ। ২৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

বুলবুল মহলানবীশ

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ ১৪ জুলাই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৭ জুলাই রাষ্ট্রীয় সম্মান ও ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানানো হয় তাকে।

মিতা চৌধুরী

দেশের প্রথিতযশা নাট্যশিল্পী মিতা চৌধুরী ২৯ জুন মারা গেছেন। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসাধীন ছিলেন মিতা।

মোহন খান

নাট্যনির্মাতা, নাট্যকার ও প্রযোজক মোহন খান মারা গেছেন ৩০ মে। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়েছে। তাঁর পরিচালিত প্রথম নাটক ‘আমার দুধমা’ বিটিভিতে প্রচার হয়। তার লেখা ও পরিচালনায় নাটক ‘সমুদ্রে গাঙচিল’, ‘সেই আমরা’, ‘নীড়ের খোঁজে গাঙচিল’, ‘জেগে উঠো সমুদ্র’, ‘মেঘবালিকা’, ‘দূরের মানুষ’, ‘আঙ্গুর লতা’, ‘হৃদয়পুরের গল্প’ ইত্যাদি।

রাজীব আশরাফ

‘হোক কলরব ফুলগুলো সব/লাল না হয়ে নীল হলো ক্যান– অর্ণবের গাওয়া তুমুল জনপ্রিয় এ গানসহ আরও অনেক গীতিকবিতার রচয়িতা রাজীব আশরাফ ১ সেপ্টেম্বর মারা গেছেন। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments