ক্যানস্যারের মতো ভয়ংকর মারণব্যাধি পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। ক্যানসারকে জয় করে সুস্থ জীবনযাপন করা বিশ্বজয়ের সমান। সেই ক্যানসারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সেই আঙুল দিয়ে বারবার গিটারে ঝড় তুলেছেন যিনি, তিনি বাংলাদেশের জনপ্রিয় রক ব্যান্ড ‘অর্থহীন’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং দলনেতা সাইদুস সালেহীন খালেদ সুমন। খ্যাতিমান এই গিটারিস্টকে তার বেস গিটার বাজানোর অসামান্য দক্ষতার কারণে ‘বেসবাবা সুমন’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।
ক্যানসারের করাল থাবা থেকে প্রায় মুক্ত হয়ে গত বছর গানে ফিরেছেন সুমন। হঠাৎ করে ফেসবুকে রোগা–পাতলা একটা স্থিরচিত্র ছড়িয়ে পড়েছে এই শিল্পীর। আর তাতেই ভীষণ চিন্তাগ্রস্থ তার ভক্তরা। তবে সবাইকে আশ্বস্ত করে বেজবাবা সুমন জানিয়েছেন, তিনি এখন ক্যানসারমুক্ত এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য ৭০ কেজি ওজন কমিয়েছেন।
তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে ফেসবুকে সুমন লিখেছেন, ‘আমি ভয়াবহ অসুস্থ নই। আমার শরীরে কোনো প্রকার ক্যানসার আর নেই। আমার স্পাইনে সমস্যা আছে, যার জন্য ভবিষ্যতেও সার্জারি লাগবে। কিন্তু এটা এত ভয়াবহ না যে আমি মারা যাচ্ছি অথবা আমি আর কনসার্ট করতে পারব না। আপনারা ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩-এ আমার স্পাইনের খারাপ অবস্থা নিয়েই কনসার্টগুলো দেখেছেন। এ মুহূর্তে স্পাইনের অবস্থা তখনের চেয়েও বেটার।’
অত্যধিক রোগা শরীর প্রসঙ্গে সুমন বলেন, ‘আমি গত ২ বছরে প্রায় ৭০ কেজি কমিয়েছি শুধু ফুড, মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খেয়ে। মানতে হয়েছে অসম্ভব রকম একটি লো ক্যালোরি ডায়েট। কারণ, আমার স্পাইন ঠিক রাখতে হলে আমার বডির ওপরের অংশের ওজন অনেক কম রাখতে হবে, যাতে স্পাইনে চাপ না পড়ে। সাধারণ মানুষের মতো ওজন মেনটেইন করলে হবে না। আমার কিছুটা আন্ডার ওয়েট থাকতে হবে। তাই আমার ওজন অনেক কমাতে হয়েছে। ওজন কমানোর সঙ্গে সঙ্গে অনেক বছর পর ক্লিন সেভ করেছি দেখে আমাকে আরও অনেক বেশি শুকনা লাগছে।’
১৯৮৬ সালে ‘ফ্রিকোয়েন্সি’ ব্যান্ড গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বেজ গিটারিস্ট সাইদুস সালেহীন খালেদ সুমন তার রক-সংগীতের জীবন শুরু করেন । ১৯৯৭ সালে তিনি যোগ দেন ব্যান্ড ‘ওয়ারফেজ’-এ গিটারবাদক হিসেবে। দুই বছর পর ‘ওয়ারফেজ’ ছেড়ে সুমন নিজের প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুমন ও অর্থহীন’ প্রকাশ করেন এবং সে বছরই প্রতিষ্ঠা করেন ‘অর্থহীন’ ব্যান্ড। ২০১৩ সাল থেকে একাধিকবার ক্যানসারে আক্রান্ত হলেও সঙ্গীতের প্রতি অসীম মমতা থেকে গানকে বিদায় জানাননি আলোচিত এ গিটারিস্ট।